Madhyamik Life Science Suggestion with PDF – WBBSE | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান সাজেশন
অধ্যায়ঃ জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়
1. সংবেদনশীলতা কাকে বলে?
উত্তরঃ উদ্দীপকের প্রভাবে জীবদের সাড়া দেওয়ার ক্ষমতাকে সংবেদনশীলতা বলে।
2. উদ্দীপক কাকে বলে?
উত্তরঃ যেসব পরিবর্তন শনাক্ত হয় এবং সাড়া প্রদানে সাহায্য করে, তাকে উদ্দীপক বলে। তাপ, আলো, বাতাস ইত্যাদি হল বাহ্যিক উদ্দীপক এবং হরমোন হল অভ্যন্তরীণ উদ্দীপক।
3. চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় জীব বাইরের উদ্দীপকের প্রভাবে কিংবা নিজের চেষ্টায় স্বতঃফূর্তভাবে জৈবিক প্রয়োজনের তাগিদে, দেহের কোন অংশ বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালন করে তাকে চলন বা মুভমেণ্ট বলে।
4. গমন কাকে বলে?
উত্তরঃ খাদ্য-সংগ্রহ, আত্মরক্ষা, বাসস্থান খোঁজা ও প্রজননের জন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চালনার দ্বারা নিজের চেষ্টায় সমগ্র জীবদেহের একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাওয়া বা নির্দিষ্ট ও পরিমাপযোগ্য কোন দূরত্ব অতিক্রম করাকেই গমন বা লোকোমোশান বলে।
5. গমনে সক্ষম দুটি উদ্ভিদের নাম লেখ।
উত্তরঃ ক্ল্যামাইডোমোনাস ও ভলভক্স।
6. গমনে অক্ষম কয়েকটি প্রাণীর নাম লেখ।
উত্তরঃ স্পঞ্জ ও প্রবাল।
7. চলন ও গমনের মধ্যে পার্থক্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তরঃ ১। স্থানত্যাগ না করে জীবদেহের অংশ-বিশেষ কিংবা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালন করাকেই চলন বলে।
আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চালনার দ্বারা সমগ্র জীবদেহের একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাওয়া বা নির্দিষ্ট ও পরিমাপযোগ্য কোন দূরত্ব অতিক্রম করাকেই গমন বলে।
২। কোন নির্দিষ্ট স্থানে আবদ্ধ থেকে চলন সম্ভব।
আর কোন নির্দিষ্ট স্থানে আবদ্ধ থেকে গমন সম্ভব নয়।
৩। চলন হলেই গমন হবে এমন কোন নিশ্চয়তা নেই।
আর গমন হলে অবশ্যই চলন হবে।
৫। কেবলমাত্র ভলভক্স, ক্ল্যামাইডোমোনাস ইত্যাদি কয়েকটি নিম্নশ্রেণির উদ্ভিদে গমন দেখতে পাওয়া যায়।
স্পঞ্জ, প্রবাল ইত্যাদি কয়েকটি প্রাণী গমনে অক্ষম।
8. চলন ও গমনের উদ্দেশ্য বা তাৎপর্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তরঃ ১। পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়ানো বা অভিযোজন।
২। শত্রুর হাত থেকে নিজেকে বাঁচানো বা আত্মরক্ষা।
৩। খাদ্য প্রস্তুতে অক্ষম জীবের, বিশেষত প্রাণের, খাদ্য-সংগ্রহ বা খাদ্যান্বেষণ।
৪। প্রাণী গমনের মাধ্যমে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করে।
৫। প্রজননের জন্যও উদ্ভিদ এবং প্রাণীর চলন ও গমন প্রয়োজন।
9. উদ্ভিদের চলন কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ উদ্ভিদের চলন দুই প্রকার। যথা সামগ্রিক চলন (Movement of Location) ও বক্র চলন (Movement of Curvature)।
10. ট্যাকটিক চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ যখন আলো, তাপমাত্রা, রাসায়নিক পদার্থ, বৈদ্যুতিক শক্তি যেকোন বহিঃস্থ উদ্দীপকের প্রভাবে উদ্ভিদ কিংবা উদ্ভিদ-অঙ্গে স্থান পরিবর্তন ঘটে তখন তাকে প্রবৃত্ত বা আবিষ্ট সামগ্রিক চলন বা ট্যাকটিক চলন বা অভিমুখ্য চলন বলে।
11. ফোটোট্যাকটিক চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ বহিঃস্থ উদ্দীপক আলোকের প্রভাবে যে ট্যাকটিক চলন দেখা যায় তাকে ফটোট্যাকটিক চলন বলে।
12. ট্রপিক চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ উদ্দীপকের উৎসের দিকে বা উদ্দীপকের গতিপথের দিকে উদ্ভিদ অঙ্গের চলনকে ট্রপিক চলন বা দিক্নির্ণীত চলন বলে।
13. ফোটোট্রপিক চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ উদ্ভিদ অঙ্গের চলন যখন আলোক উৎসের গতিপথ অনুসারে হয় তখন তাকে আলোকবৃত্তি বা আলোকবর্তী চলন বা ফোটোট্রপিক চলন বলে।
14. হাইড্রোট্রপিক চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ উদ্ভিদ অঙ্গের চলন যখন জলের উৎসের গতিপথ অনুসারে হয় তখন তাকে জলবৃত্তি বা জলবর্তী বা হাইড্রোট্রপিক চলন বলে।
15. জিওট্রপিক চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ উদ্ভিদ অঙ্গের চলন যখন মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে অভিকর্ষের গতিপথ অনুসারে হয় তখন তাকে অভিকর্ষবৃত্তি বা অভিকর্ষবর্তী বা জিওট্রপিক চলন বলে।
16. ন্যাস্টিক চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ উদ্ভিদ অঙ্গের চলন যখন উদ্দীপকের গতিপথ অনুসারে নিয়ন্ত্রিত না হয়ে উদ্দীপকের তীব্রতা উপর নির্ভর করে নিয়ন্ত্রিত হয়, তখন সেই প্রকার চলনকে ন্যাস্টিক চলন বা ব্যাপ্তি চলন বলে।
17. ফোটোন্যাস্টিক চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ উদ্ভিদ অঙ্গের সঞ্চালন যখন আলোকের তীব্রতার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তখন তাকে ফোটোন্যাস্টিক বা আলোক ব্যাপ্তি চলন বলে। যেমন – পদ্ম, সূর্যমুখী প্রভৃতি ফুল আলোর তীব্রতায় ফোটে আবার কম আলোকে মুদে যায়।
18. থার্মোন্যাস্টিক চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ উদ্ভিদ অঙ্গের সঞ্চালন বা চলন যখন উষ্ণতার তীব্রতার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তখন তাকে থার্মোন্যাস্টিক বা তাপব্যাপ্তি চলন বলে। যেমন – টিউলিপ ফুলের পাপড়ি অধিক তাপে খোলে, আবার কম তাপে মুদে যায়।
19. সিসমোন্যাস্টিক চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ স্পর্শ, ঘর্ষণ, আঘাত, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি উদ্দীপকের তীব্রতার প্রভাবে উদ্ভিদ অঙ্গের যে ন্যাস্টিক চলন হয়, তাকে সিসমোন্যাস্টিক বা স্পর্শব্যাপ্তি চলন বলে। যেমন – লজ্জাবতী লতার পাতা স্পর্শ করা মাত্র পাতার পত্রগুলি নুয়ে পড়ে। কারণ পত্রগুলি উত্তেজিত হলে তাদের স্ফীতবৃন্ত বা পালভিনাস থেকে জল অন্য কোষে চলে গেলে রসস্ফীতির চাপ কমে যায় ফলে পত্রগুলি নুয়ে পড়ে।
20. কেমোন্যাস্টিক চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো রাসায়নিক পদার্থের (প্রোটিন, ইথার, ক্লোরোফর্ম প্রভৃতি) সংস্পর্শে উদ্ভিদ অঙ্গে যে সঞ্চালন বা চলন ঘটে তাকে কেমোন্যাস্টিক বা রসায়নব্যাপ্তি চলন বলে। যেমন – সূর্যশিশির (পতঙ্গভুক) উদ্ভিদের পাতায় কর্ষিকাগুলি পতঙ্গের (প্রোটিন) সংস্পর্শ আসামাত্র বেঁকে গিয়ে পতঙ্গকে আবদ্ধ করে।
21. হাইপোন্যাস্টি চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ পাতার গঠনের প্রথম পর্যায়ে অঙ্কভাগের কোশগুলি পৃষ্টভাগের কোশ অপেক্ষা বেশি বৃদ্ধির ফলে পাতা গুটিয়ে থাকে একে হাইপোন্যাস্টি বলে। যেমন – ফার্ণ, কচি কলাপাতা, কচুপাতা জন্মাবার সময় গুটিয়ে থাকে।
22. এপিন্যাস্টি চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ ইহা হাইপোন্যাস্টির ঠিক বিপরীত অর্থাৎ পাতার গঠনের পরবর্তী পর্যায়ে পৃষ্টভাগের কোশগুলি অঙ্কভাগের কোশের চেয়ে বেশি বৃদ্ধির ফলে পাতাটি সোজা হয়ে যায়। যেমন- ফার্ণ ও কচুপাতার ক্রমবৃদ্ধি।
23. ন্যুটেশন বা বলন কাকে বলে?
উত্তরঃ বল্লী জাতীয় উদ্ভিদের বর্ধনশীল কাণ্ডের আঁকা-বাঁকা বৃদ্ধিই নুটেশন।
24. সারকামন্যুটেশান বা পরিবলন কাকে বলে?
উত্তরঃ কোন বস্তুকে বেস্টন করে সর্পিলভাবে অগ্রসর বা বৃদ্ধিই সারকামন্যুটেশান বা পরিবলন। যেমন মটর, কুমড়ো, উচ্চে, করলা প্রভৃতি উদ্ভিদের আকর্ষ।
25. ফোটোট্রপিজম কাকে বলে?
উত্তরঃ যে ট্রপিক চলনে উদ্ভিদ-অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আলোক-উদ্দীপক দ্বারা প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় তাকে ফোটোট্রপিজম চলন বলে।
26. পেরিস্টলসিস্ চলন কাকে বলে?
উত্তরঃ পৌষ্টিকনালীর যে পর্যায়ক্রমিক সংকোচন ও প্রসারণে খাদ্যবস্তু পরিপাকনালীর এক অংশ থেকে অন্য অংশে প্রেরিত হয় সেই চলনকে পেরিস্টলসিস্ চলন বলে।
27. মাছের গমনে সহায়তাকারী প্রধান অঙ্গগুলির নাম লেখো।
উত্তরঃ ক। যুগ্মপাখনা – দুই জোড়া, বক্ষ পাখনা ও শ্রোণী পাখনা।
খ। অযুগ্ম পাখনা – তিনটি; পৃষ্ঠ পাখনা, পায়ু পাখনা ও পুচ্ছ পাখনা।
গ। লেজ।
ঘ। পটকা।
ঙ। ত্বকস্থিত শ্লেষ্মাগ্রন্থি।
চ। মাকু বা পটলের মত দেহাকৃতি।
28. অ্যামিবার গমন অঙ্গের নাম কী?
উত্তরঃ সিউডোপোডিয়া বা ক্ষণপদ।
29. রাইগার মরটিস বা মরণ সংকোচন কাকে বলে?
উত্তরঃ মৃত্যুর পর পেশী যখন সংকোচনশীলতা ধর্ম হারিয়ে অনড় হয় তখন তাকে রাইগার মরটিস বা মরণ সংকোচন বলে।
30. প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দেহে কতগুলি হাড় থাকে?
উত্তরঃ ২০৬ টি।
31. বল ও সকেট সন্ধি বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ একটি অস্থির বলের মত গোলাকৃতি অংশ আর একটি অস্থির সকেট বা কোটরে এমন সুন্দরভাবে স্থাপিত হয় – যাতে অঙ্গগুলির প্রায় সমস্ত দিকেই সঞ্চালন সম্ভব। যেমন স্কন্ধের প্রগণ্ডাস্থি ও অংস্ফলকের সন্ধি কিংবা ঊর্বাস্থি ও বস্তি কোটরের সন্ধি।
32. দ্বিপদী গমন কাকে বলে?
উত্তরঃ দুই পায়ের দ্বারা যে গমন সম্পন্ন হয় তাকে দ্বি-পদী গমন বলে।
33. হরমোনকে রাসায়নিক সমন্বায়ক বলা হয় কেন?
উত্তরঃ জীবদেহে নির্দিষ্ট স্থানে উৎপন্ন হয়ে হরমোন সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে এবং কোশের বিক্রিয়াগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে। এইভাবে জীবদেহে রাসায়নিক সংযোগ গড়ে তোলার জন্য হরমোনকে রাসায়নিক সমন্বায়ক বা chemical coordinator বলে।
34. অগ্রস্থ প্রকটতা কাকে বলে?
উত্তরঃ অগ্রমুকুলের উপস্থিতিতে কাক্ষিক মুকুলের বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়, কিন্তু অগ্রমুকুল কেটে বাদ দিলে কাক্ষিক মুকুলের বৃদ্ধি ঘটে এবং শাখাপ্রশাখা সৃষ্টি হয়। এই ঘটনাকে অগ্রস্থ প্রকটতা বলে। অক্সিন অগ্রস্থ প্রকটতা ঘটায় এবং কাক্ষিক (পার্শ্বীয়) মুকুলের বৃদ্ধি ব্যাহত করে।
35. পিটুইটারিকে মাস্টার গ্ল্যাণ্ড বলে কেন?
উত্তরঃ পিটুইটারি গ্রন্থি নিঃসৃত হরমোন অন্যান্য অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে বলে এই গ্রন্থিকে মাস্টার গ্ল্যাণ্ড (master gland) বলে।
36. জিব্বেরেলিন কীভাবে মুকুল ও বীজের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ করে?
উত্তরঃ যে সমস্ত বীজে ও মুকুলে স্বল্প অন্তর্জনিষ্ণু জিব্বেরেলিন থাকে, সেক্ষেত্রে বহির্জনিষ্ণু জিব্বেরেলিন প্রয়োগে বীজ ও মুকুলের সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ করা যায়।
37. আগাছানাশক হিসাবে কৃত্রিম অক্সিনের ভূমিকা কী?
উত্তরঃ ধান, গম, যব প্রভৃতি শষ্যক্ষেত্রে কৃত্রিম অক্সিন (2, 4-D) ব্যবহার করে আগাছা নির্মূল করা হয়। এতে ফসলের উপর কোনো স্থায়ী প্রভাব পড়ে না।
38. অগ্ন্যাশয়ের অন্তঃক্ষরা কোশগুলি কী কী? সেখান থেকে কী কী হরমোন নিঃসৃত হয়?
উত্তরঃ অগ্ন্যাশয়ের অন্তঃক্ষরা কোশগুলি ও সেখান থেকে নিঃসৃত হরমোন গুলি হল যথাক্রমে-
বিটা কোশ – ইনসুলিন
আলফা কোশ – গ্লুকাগন
ডেলটা কোশ – সোমাটোস্টেটিন।
39. অগ্ন্যাশয়কে মিশ্র গ্রন্থি বলে কেন?
উত্তরঃ অগ্ন্যাশয় গ্রন্থি বহিঃক্ষরা কোশ ও অন্তঃক্ষরা কোশ উভয় প্রকার কোশ দ্বারা গঠিত তাই অগ্ন্যাশয়কে মিশ্র গ্রন্থি বলে।
40. অ্যাড্রেনালিনকে সংকটকালীন হরমোন বলে কেন?
উত্তরঃ স্বাভাবিক অবস্থায় অ্যাড্রেনালিনের ভূমিকা নগণ্য হলেও রাগ, ভয়, আনন্দ, দুশ্চিন্তা প্রভৃতি উত্তেজনাকালে এই হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। আবার জরুরিঅবস্থা বা সংকটকাল দূর হলে এই হরমোনের ক্রিয়াশীলতা হ্রাস পায়, এই কারণে অ্যাড্রিনালিনকে জরুরিকালীন বা সংকটকালীন হরমোন (emergency hormone) বলে।
41. টেস্টাস্টেরনের দুটি কাজ উল্লেখ করো।
উত্তরঃ টেস্টোস্টেরনের দুটি কাজ হল-
(১) পুরুষের যৌনাঙ্গের পরিবর্তনঃ টেস্টোস্টেরনের প্রভাবে পুরুষের প্রধান যৌনাঙ্গের (শিশ্ন ও শুক্রাশয়) এবং আনুষঙ্গিক যৌনাঙ্গের (কাউপার গ্রন্থি, প্রটেস্ট গ্রন্থি) বৃদ্ধি ঘটে।
(২) মৌল বিপাকীয় হারঃ টেস্টোস্টেরন দেহে মৌল বিপাকীয় হার এবং প্রোটিন সংশ্লেষ বৃদ্ধি করে।
42. গলগণ্ড ও মধুমেহ রোগ হয় কোন হরমোনের কীরূপ ক্ষরণের প্রভাবে?
উত্তরঃ গলগণ্ড বা গয়টার (Goitre): থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন নিঃসরণ হ্রাস পেলে আয়োডিন বিপাক ব্যাহত হয়। আয়োডিনের অভাবে গলগণ্ড রোগ হয়।
মধুমেহ বা ডায়াবেটিস মেলিটাস (Diabetes mellitus): অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোশ থেকে ইনসুলিন হরমোন কম নিঃসৃত হলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, ফলে মধুমেহ বা ডায়াবেটিস মেলিটাস রোগ হয়।
43. বহিঃক্ষরা ও অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির দুটি পার্থক্য দেখাও।
উত্তরঃ (১) বহিঃক্ষরা গ্রন্থির নালি থাকে, অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির নালি থাকে না।
(২) বহিঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে ক্ষরিত রস নালি দিয়ে গ্রন্থির বাইরে আসে এবং উৎপত্তিস্থলে ও উৎপত্তিস্থল থেকে দূরবর্তী স্থানে ক্রিয়া করে, অপরপক্ষে অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির ক্ষরণ পদার্থ উৎসস্থল থেকে দূরবর্তী স্থানে ক্রিয়া করে।
44. স্নায়ুসন্নিধি কাকে বলে?
উত্তরঃ দুটি নিউরোনের যে সংযোগস্থলে একটি নিউরোনের শেষ এবং অপর নিউরোনের শুরু, তাকে সাইন্যাপস বা স্নায়ুসন্নিধি বা প্রান্তসন্নিকর্ষ বলে।
45. লঘুমস্তিষ্কের কাজ কী?
উত্তরঃ লঘুমস্তিষ্কের কাজগুলি হল-
(১) দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে,
(২) দেহভঙ্গিমা নিয়ন্ত্রণ করে,
(৩) প্রত্যাবর্তী স্নায়ুকেন্দ্ররূপে কাজ করে।
46. উপযোজন কাকে বলে?
উত্তরঃ স্থান পরিবর্তন না করে অক্ষিগোলকের পেশি ও লেন্সের সাহায্যে যে পদ্ধতিতে বিভিন্ন দূরত্বে অবস্থিত বস্তুকে স্পষ্টভাবে দেখা যায় তাকে উপযোজন বা Accommodation বলে।
47. মায়োপিয়া কাকে বলে? এর সমাধান কী?
উত্তরঃ যে দৃষ্টিতে দূরের দৃষ্টি ব্যাহত হয়, কিন্তু নিকটের দৃষ্টি ঠিক থাকে, তাকে মায়োপিয়া বা নিকটদৃষ্টি বলে।
চক্ষুগোলকের ব্যাস স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যাওয়ার ফলে বস্তুর প্রতিবিম্ব রেটিনার সামনে পড়ে, ফলে দূরের বস্তু দেখা যায় না।
সমাধানঃ অবতল সেন্স (concave lens) যুক্ত চশমা ব্যবহার করলে এই ত্রুটি দূর হয়।
48. হাইপারমেট্রোপিয়া বলতে কী বোঝ? এর সমাধান কী?
উত্তরঃ যে দৃষ্টিতে নিকটের দৃষ্টি ব্যাহত হয়, কিন্তু দূরের দৃষ্টি ঠিক থাকে তাকে দূরবদ্ধ দৃষ্টি বা হাইপারমেট্রোপিয়া (Hypermetropia) বা হাইপেরোপিয়া (Hyperopia) বলে।
চক্ষুগোলকের ব্যাস স্বাভাবিকের তুলনায় ছোটো হওয়ায় বস্তুর প্রতিবিম্ব রেটিনার পিছনে পড়ে, ফলে কাছের বস্তু দেখা যায় না।
সমাধানঃ উত্তল লেন্স (convex lens) যুক্ত চশমা ব্যবহার করলে এই রোগ সারে।
49. ক্যাটারাক্ট কাকে বলে? এর সমাধান কী?
উত্তরঃ বেশি বয়স্ক লোকদের লেন্স সম্পূর্ণভাবে অস্বচ্ছ হয়ে ওঠে, ফলে সম্পূর্ণভাবে দৃষ্টিশক্তি ব্যাহত হয়। উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে লোকটি সম্পূর্ণভাবে অন্ধ হয়ে যায়।
সমাধানঃ সার্জারি করে আক্রান্ত লেন্সটিকে চোখ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর হাইপাওয়ারের উপযুক্ত চশমা ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। বর্তমানে একটি ক্ষুদ্র প্লাস্টিক লেন্স আইরিশের পিছনে আটকে দেওয়া হয়।
50. জীবের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চলনকে কী বলে?
উত্তরঃ চলন।
51. মাছের গমন অঙ্গের নাম কী?
উত্তরঃ পাখনা।
52. স্পর্শের প্রভাবে লজ্জাবতীর পাতা মুড়ে যায় – এটি কী প্রকারের চলন?
উত্তরঃ সিসমোন্যাস্টি (Seismonasty) বা স্পর্শব্যাপ্তি।
53. ট্যাকটিক চলনের একটা উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ এককোষী কয়েকটি শৈবালের অন্ধকার থেকে আলোর দিকে যাওয়া (ফটোট্যাকটিক)।
54. কোন হরমোনের প্রভাবে উদ্ভিদের আলোকবর্তী চলন হয়?
উত্তরঃ অক্সিন।
55. অভিকর্ষজ চলন উদ্ভিদের কোন অঙ্গে দেখা যায়?
উত্তরঃ উদ্ভিদের মূল বা শিকড়ে।
56. পদ্ম ফুলের পাপড়ি অধিক তাপে খোলে এবং কম তাপে মুড়ে যায় – এটি কী ধরণের চলন?
উত্তরঃ থার্মোন্যাস্টি বা তাপব্যাপ্তি।
57. হরমোন শব্দটি কোন গ্রিক শব্দ থেকে উৎপন্ন হয়েছে?
উত্তরঃ গ্রিক শব্দ হরমোইন (Hormoein) বা হরমাও (Hormao) থেকে উৎপন্ন হয়েছে।
58. IAA এর পুরো নাম কী?
উত্তরঃ Indole Acetic Acid (ইন্ডোল অ্যাসেটিক অ্যাসিড)।
59. অক্সিনের রাসায়নিক উপাদানগুলি কী কী?
উত্তরঃ অক্সিনের রাসায়নিক উপাদান গুলি হল – কার্বন (C), হাইড্রোজেন (H), অক্সিজেন (O) এবং নাইট্রোজেন (N)।
60. অক্সিনের প্রভাবে বীজবিহীন ফল উৎপাদনকে কী বলে?
উত্তরঃ পার্থেনোকার্পি (parthenocarpy)।
61. একটি নাইট্রোজেন বিহীন হরমোনের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ জিব্বেরেলিন (Gibberellin)।
62. নারকেলের তরল শস্যে কোন হরমোন পাওয়া যায়?
উত্তরঃ সাইটোকাইনিন (Cytokinin)।
63. শাখাকলম সৃষ্টির জন্য কোন কৃত্রিম হরমোন দেওয়া হয়?
উত্তরঃ অক্সিন।
64. প্রাণী হরমোনের উৎসস্থল কোথায়?
উত্তরঃ বিভিন্ন অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি। যেমন – পিটুইটারি, আড্রিনালিন ইত্যাদি।
65. টেস্টোস্টেরণ কোন গ্রন্থি থেকে নিসৃত হয়?
উত্তরঃ শুক্রাশয় (পুং-জনন গ্রন্থি) থেকে।
66. একটি মিশ্র গ্রন্থির উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ অগ্ন্যাশয়।
67. বৃক্কের উপর কোন গ্রন্থি অবস্থিত?
উত্তরঃ অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি।
68. ইনসুলিন কোন কোশ থেকে নিঃসৃত হয়?
উত্তরঃ অগ্ন্যাশয়-এর বিটা কোশ থেকে।
69. ACTH এর পুরো নাম কী?
উত্তরঃ Adreno Cortico Trophic Hormone (অ্যাড্রিনো কর্টিকো ট্রফিক হরমোন)।
70. গ্ল্যাণ্ড বা গ্রন্থি কাকে বলে?
উত্তরঃ কতকগুলি নির্দিষ্ট কোশসমষ্টি বা কলা যখন কোন রস ক্ষরণ করে তখন তাকে গ্রন্থি বলে। যেমন স্যালিভারি গ্রন্থি, প্যাংক্রিয়াস গ্রন্থি, পিটুইটারি গ্রন্থি ইত্যাদি।
71. এক্সোক্রিন গ্ল্যাণ্ড বা সনাল গ্রন্থি কাকে বলে?
উত্তরঃ যখন কোন গ্রন্থি নিঃসৃত ক্ষরণ বা রস নালীর মাধ্যমে গ্রন্থির বাইরে নিসৃত হয় তখন তাকে এক্সোক্রিন গ্ল্যাণ্ড বা সনাল গ্রন্থি বলে।
72. এণ্ডোক্রিন গ্ল্যাণ্ড বা অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি কাকে বলে?
উত্তরঃ যখন কোন গ্রন্থি-নিঃসৃত ক্ষরণ বা রস নালীবিহনে সরাসরি রক্তবাহে প্রবেশ করে তখন তাকে এণ্ডোক্রিন গ্ল্যাণ্ড বা অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি বলে।
73. মিক্সড গ্ল্যাণ্ড বা মিশ্রগ্রন্থি কাকে বলে?
উত্তরঃ যখন কোন গ্রন্থি অন্তঃক্ষরা বা মিশ্রগ্রন্থি অর্থাৎ অনাল ও নালীযুক্ত গ্রন্থি বলে। তবে এসকল গ্রন্থি থেকে হরমোন কখনই নালীপথে বের হয় না – পরন্তু রক্তস্রোতের মাধ্যমে নীত হয়। যেমন প্যাংক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়।
74. স্থানীয় হরমোন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সীমিত সংখ্যক হরমোন যেখানে ক্ষরিত হয় সেখানেই উতপত্তিস্থলের অঙ্গকেই উদ্দীপিত করে বা ক্রিয়াশীল হয় তাদের স্থানীয় হরমোন বলে। যেমন টেস্টোস্টেরন, প্রোস্টাগ্ল্যাণ্ডিন।
75. ট্রফিক হরমোন কাকে বল?
উত্তরঃ যেসকল হরমোন কোন একটি অনালগ্রন্থি থেকে উৎপন্ন হয়ে অন্য একটি অনালগ্রন্থিকে উত্তেজক রস বা হরমোন ক্ষরণে উদ্দীপিত করে তাদের ট্রফিক হরমোন বলে। যেমন ACTH, TSH, FSH।
76. হরমোনকে রাসায়নিক দূত বা রাসায়নিক বার্তাবহ বা কেমিক্যাল মেসেঞ্জার বলে কেন?
উত্তরঃ দূত যেমন এক দেশের বার্তা বা সংবাদ আর এক দেশে বহন করে নিয়ে যায়, ঠিক অনুরূপভাবে হরমোনগুলি এক জায়গায় উৎপন্ন হয়ে অর্থাৎ উৎপত্তিস্থল থেকে অপর কোন জায়গায় অর্থাৎ বহুদূরে পরিবাহিত হয়ে রাসায়নিক বার্তা বহন করে সেখানকার অঙ্গকে উদ্দীপিত করে বা ক্রিয়াশীল হয়। এই কারণে হরমোনকে রাসায়নিক সমন্বায়ক বলা হয়।
77. হরমোনের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ কর?
উত্তরঃ ১। হরমোন অতি সহজেই কোশ-ঝিল্লির বা রক্তনালীর অন্তঃস্থ আবরণীকলার মধ্য দিয়ে অতিক্রমণে সক্ষম।
২। হরমোন একপ্রকার জটিল জৈব যৌগ এবং ইহা কোশ বা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়।
৩। হরমোন প্রধানত সৃষ্টি বা উৎপত্তির স্থান থেকে দূরে দেহের অন্য কোষে ক্রিয়া বা প্রভাব বিস্তার করে।
৪। প্রতিটি হরমোন নির্দিষ্ট অঙ্গ কিংবা কার্যের উপর সক্রিয়।
৫। হরমোন তার নিয়ন্ত্রণাধীন কোশের কোন বিক্রিয়া আরম্ভ করতে পারে না, কেবল বিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।
৬। হরমোন জৈব অনুঘটক রূপে কাজ করে এবং কার্যসমাপ্তিতে হরমোন বিনষ্ট হয়ে দেহ থেকে বের হয়ে যায়।
৭। হরমোন জীবদেহে কেমিক্যাল কো-অর্ডিনেশান অর্থাৎ রাসায়নিক সমন্বয়সাধন করে থাকে এবং কেমিক্যাল কো-অর্ডিনেটর রূপে কাজ করে থাকে।
৮। কোন একটি এণ্ডোক্রিন গ্ল্যাণ্ডের ক্ষরণক্রিয়া পরোক্ষভাবে অন্য গ্ল্যাণ্ডের মাধ্যমে নিজেই নিয়ন্ত্রিত হয়- এই পদ্ধতি ফিড-ব্যাক নামে হরমোনের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।
৯। হরমোন কখনো কখনো দ্বৈত-নিয়ন্ত্রক রূপে কাজ করে অর্থাৎ কোনও একটি হরমোন কোন কাজে সহায়তা করে আবার কোনও একটি হরমোন ঐ নির্দিষ্ট কাজে বাধা দেয়।
78. হরমোন ও উৎসেচক এর মধ্যে পার্থক্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তরঃ ১। উৎসেচক নিজে অবিকৃত থেকে রাসায়নিক বিক্রিয়াকে ত্বরান্বিত বা মন্দীভূত করে; অর্থাৎ জৈব অনুঘটকরূপে কাজ করে।
হরমোন জৈব অনুঘটকরূপে কাজ করলেও ক্রিয়ার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
২। উৎসেচক বা এনজাইম সনালগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়ে নালীপথে পরিবাহিত হয়।
হরমোন বা উত্তেজক রস অনালগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়ে রক্ত বা লসিকা দ্বারা পরিবাহিত হয়।
৩। প্রায় সকল প্রকার সজীব কোশ থেকে এনজাইম উৎপন্ন হয়।
কেবলমাত্র তরুণ কোশ কিংবা অনালগ্রন্থির কোশ থেকে হরমোন ক্ষরিত হয়।
৪। এনজাইম উৎপত্তিস্থল এবং অন্যত্র ক্রিয়ায় সমর্থ।
কয়েকটি স্থানীয় হরমোন ব্যতীত কেবলমাত্র দূরবর্তী স্থানে ক্রিয়ায় সমর্থ।
79. উদ্ভিদ হরমোন কাকে বলে?
উত্তরঃ উদ্ভিদের বৃদ্ধি এবং অন্যান্য শারীর-বৃত্তীয় কারর্যে-সহায়তাকারী জৈব যৌগগুলোকে সমষ্টিগতভাবে উদ্ভিদ হরমোন বলে।
80. অক্সিন কাকে বলে?
উত্তরঃ উদ্ভিদের কাণ্ড ও মূলের অগ্রভাগে, ভ্রূণমুকুলাবরণী, বর্ধনশীল পাতার কোশে সংশ্লেষিত নাইট্রোজেনঘটিত যে জৈব অম্ল উদ্ভিদের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে, তাকে অক্সিন বলে।
81. কৃষিকার্যে অক্সিনের ব্যবহার উল্লেখ করো।
উত্তরঃ উদ্ভিদের কাণ্ড, মুকুলাবরণী এবং মূলের অগ্রভাগে উৎপন্ন প্রধানতঃ কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন সহযোগে গঠিত উদ্ভিদদেহের প্রধান বৃদ্ধি-নিয়ন্ত্রক একপ্রকার জৈব অ্যাসিড বা হরমোনকে অক্সিন বলে।
82. জিব্বেরেলিন কাকে বলে?
উত্তরঃ উদ্ভিদের পরিপক্ক বীজে, অঙ্কুরিত চারাগাছ, বীজপত্র, মুকুল ইত্যাদিতে সংশ্লেষিত টারপিনয়েড গোষ্ঠীর যে জৈব অম্ল উদ্ভিদের দৈঘ্যের বৃদ্ধি ঘটায় এবং বীজের সুপ্ত দশা হ্রাস করে এবং ফুল ধারণে সাহায্য করে তাকে জিব্রালিন বা জিব্বেরেলিন বলে।
83. জিব্বেরেলিন হরমোনের ব্যবহারিক প্রয়োগগুলি উল্লেখ করো।
উত্তরঃ ১। জিব্বেরেলিনের বিভিন্ন কার্যকলাপের মধ্যে মুকুলের সুপ্তাবস্থা দূর করা একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য কাজ।
২। জিব্বেরেলিনের কার্যকারিতা অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোশ-বিভাজন এবং সামগ্রিকভাবে উদ্ভিদের বৃদ্ধির সহায়ক।
৩। ফুল-ফলগঠনে জিব্বেরেলিন প্রভাববিস্তার করে।
৪। জিব্বেরেলিনের প্রভাবে জিন-নিয়ন্ত্রিত বংশগত খর্বতা বিনষ্ট হয়ে উদ্ভিদ দৈর্ঘ্যে বৃদ্ধি পায়।
৫। বীজের অঙ্কুরোদগমের সময় জিব্বেরেলিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
৬। জিব্বেরেলিনের উপস্থিতিতে কখনো কখনো বীজবিহীন ফল সৃষ্টি হয়ে থাকে।
৭। কখনো কখনো উদ্ভিদের লিঙ্গের বাহ্য প্রকাশেও জিব্বেরেলিনের কার্যকারিতা পরিলক্ষিত হয়।
৮। গাছের পাতায় জিব্বেরেলিন স্প্রে করলে পাতার আয়তন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।
84. কাইনিন কাকে বলে?
উত্তরঃ উদ্ভিদদেহের যে সকল হরমোন বা উত্তেজক রস কোশ-বিভাজনকে উদ্দীপিত করে – এমন কয়েকটি সমগোত্রীয়পদার্থকে সমষ্টিগতভাবে বা অঙ্কুরিত বীজে উৎপন্ন নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষারীয় হরমোনকে কাইনিন বলে।
85. কাইনিন হরমোনের কার্যকারিতাগুলি উল্লেখ করো।
উত্তরঃ কাইনিন বা সাইটোকাইনিন-এর কাজ গুলি হল –
i) উদ্ভিদের কোশ বিভাজন ঘটায়,
ii) পার্শ্বীয় মুকুলের বৃদ্ধি ঘটায়
iii) পত্রমোচন বিলম্বিত করে।
86. কাকে এবং কেন অ্যাণ্টি-জিব্বেরেলিন বলে?
উত্তরঃ ডরমিন এবং অ্যাবসেসিন হল দুটি বৃদ্ধি প্রতিরোধক হরমোন। এদের মূল রাসায়নিক পদার্থ হল অ্যাবসেসিক অ্যাসিড। যেহেতু অ্যাবসেসিক অ্যাসিড জিব্বেরেলিনের ক্রিয়াশীলতাকে প্রতিরোধ বা ব্যাহত করে তাই একে অ্যাণ্টি-জিব্বেরেলিন বলে।
87. কয়েকটি প্রাণী হরমোনের নাম লেখো।
উত্তরঃ ACTH, TSH, থাইরক্সিন, ইনসুলিন, অ্যাড্রেনালিন, টেস্টোস্টেরন, ইস্ট্রোজেন ইত্যাদি।
88. থাইরয়েড গ্রন্থিকে অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি বলা হয় কেন?
উত্তরঃ যেহেতু থাইরয়েড একটি অনাল গ্রন্থি (Ductless Gland) এবং এর নিঃসৃত থাইরক্সিন ইত্যাদি হরমোনগুলি ব্যাপন প্রক্রিয়ায় সরাসরি রক্তে মিশ্রিত হয় তাই থাইরয়েড গ্রন্থিকে এণ্ডোক্রিন গ্ল্যান্ড বা অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি বলে।
89. ইনসুলিন কোথা থেকে ক্ষরিত হয়? এর প্রধান কাজ কী?
উত্তরঃ প্যাংক্রিয়াসের অন্তঃক্ষরা অংশের আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহ্যান্স-এর বিটা কোশ থেকে ইনসুলিন ক্ষরিত হয়।
রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা এর প্রধান কাজ।
90. ডায়াবেটিস মেলাইটাস কাকে বলে?
উত্তরঃ রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক পরিমাণ 100 cc রক্তে 80-120 mg. রক্তে শর্করার পরিমাণ এর থেকে বেশি হলে যে বিশেষ লক্ষণবিশিষ্ট রোগ হয় তাকে ডায়াবেটিস মেলাইটাস বা মধুমেহ বলে।
91. নিউরোহরমোন কাকে বলে?
উত্তরঃ নিউরো-সিক্রেটরি কোশ বা স্নায়কোশ থেকে নিঃসৃত ও নিয়ন্ত্রিত রাসায়নিক পদার্থকে নিউরোহরমোন বলে।
92. একডাইসোন কী?
উত্তরঃ পতঙ্গের মস্তিষ্কের নিউরোসিক্রেটরি কোশ থেকে নিঃসৃত যে হরমোন পতঙ্গের নির্মোচন এবং শূককীটের রূপান্তরে সাহায্য করে তাকে একডাইসোন বলে।
93. এমন একটি হরমোনের নাম কর যা দেহের সর্বত্র পাওয়া যায়?
উত্তরঃ প্রোস্টাগ্ল্যাণ্ডিন।
94. গোনাডোট্রফিক হর্মোন কোন গ্রন্থি থেকে ক্ষরিত হয়?
উত্তরঃ পিটুইটারি গ্রন্থির অগ্রভাগ থেকে গোনাডোট্রফিক হরমোন ক্ষরিত হয়।
95. প্রণিদেহে হরমোনের দুটি ব্যবহারিক প্রয়োগ উল্লেখ করো।
উত্তরঃ (১) পিটুইটারি নির্যাস প্রয়োগ করে মাছের প্রজনন ঘটানো হয়ে থাকে।
(২) হাঁপানির শ্বাসকষ্টে অ্যাড্রিনালিন প্রয়োগ করা হয়।
96. স্নায়ুতন্ত্র কাকে বলে?
উত্তরঃ স্নায়ুকোশ ও নিউরোগ্লিয়া দিয়ে গঠিত যে তন্ত্রের সাহায্যে প্রাণীদেহে উদ্দীপনা গ্রহণ, উদ্দীপনায় সাড়া দিয়ে পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা এবং দেহের বিভিন্ন যন্ত্র ও তন্ত্রের কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন হয়, তাকে স্নায়ুতন্ত্র বা নার্ভাস সিস্টেম বলে।
97. গ্রাহক বা রিসেপটরস কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল কোশ বা অঙ্গ জীবদেহে এক-একরকম বাহ্যিক কিংবা অভ্যন্তরীণ উদ্দীপনা গ্রহণ করে, তাকে গ্রাহক বলে।
98. বাহক বা সঞ্চারক কাকে বলে?
উত্তরঃ জীবদেহে গ্রাহক বা রিসেপটরস্ দ্বারা যে ব্যাবস্থাপনার মাধ্যমে গৃহীত উদ্দীপনা মুহূর্তের মধ্যে সমস্ত জীবদেহে বাহিত বা সঞ্চারিত হয়ে থাকে, তাকে বাহক বা সঞ্চারক বলে। যেমন-নিউরোন ও নার্ভ বাহকের কাজ করে।
99. প্রতিবেদন বা ইফেক্টরস কাকে বলে?
উত্তরঃ দেহের যে সকল অঙ্গ স্নায়ুস্পন্দন বা স্নায়ু-তরঙ্গ দ্বারা উত্তেজিত হিয়ে বিশেষভাবে সাড়া দেয় কিংবা প্রতিক্রিয়া দেখায়, তাদের প্রতিবেদন বা সাড়াদানকারী অঙ্গ বা ইফেক্টরস্ বলে। যেমন-মাংসপেশী এবং গ্রন্থি ইফেক্টরস্।
100. নিউরোন কাকে বলে?
উত্তরঃ কোশদেহ ও সকল প্রকার প্রবর্ধক নিয়ে গঠিত স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যগত একক যা স্নায়ুস্পন্দন পরিবহন করে তাকে নিউরোন বলে।
101. ডেনড্রন বা কৈশতন্তু কাকে বলে?
উত্তরঃ কোশদেহ থেকে নির্গত ক্ষুদ্র শাখা-প্রশাখাযুক্ত যে প্রবর্ধকগুলি স্নায়ুস্পন্দন পূর্ববর্তী নিউরোন বা রিসেপটর থেকে গ্রহণ করে কোশদেহে প্রেরণ করে তাদের ডেনড্রন বলে।
102. অ্যাক্সন বা অক্ষতন্তু কাকে বলে?
উত্তরঃ নিউরোনের যে দীর্ঘ ও আজ্ঞাবহ প্রবর্ধক স্নায়ুস্পন্দনকে কোশদেহ থেকে পরবর্তী নিউরোনে বা কারকে বহন করে তাকে অ্যাক্সন বলে।
103. স্নায়ু কাকে বলে?
উত্তরঃ যোগকলার আবরণবেষ্টিত, রক্তবাহ ও ফ্যাটকোশ যুক্ত স্নায়ুতন্তুগুচ্ছকে স্নায়ু বা নার্ভ বলে।
104. কার্য অনুযায়ী নার্ভ বা স্নায়ু কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ কার্য অনুযায়ী স্নায়ু তিন প্রকার, যথা-বহির্বাহী, অন্তর্বাহী ও মিশ্র স্নায়ু।
105. অন্তর্বাহী স্নায়ু কাকে বলে?
উত্তরঃ যে স্নায়ু রিসেপটর থেকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে উদ্দীপনা (stimuli) বহন করে, তাকে Afferent nerve বা অন্তর্বাহী স্নায়ু বলে। এই প্রকার স্নায়ু সেনসরি নিউরোন দিয়ে গঠিত হয়। যেমন – অলফ্যাক্টরি স্নায়ু (১ম করোটি স্নায়ু), অপটিক স্নায়ু (২য় করোটি স্নায়ু) অডিটোরি স্নায়ু (অষ্টম করোটি স্নায়ু)।
106. বহির্বাহী স্নায়ু কাকে বলে?
উত্তরঃ যে স্নায়ু বার্তা বা সাড়া (response) কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে ইফেকটরে বহন করে, তাকে Efferent nerve বা বহির্বাহী স্নায়ু বলে। এই প্রকার স্নায়ু মোটর নিউরোন দিয়ে গঠিত। যেমন – অকিউলোমোটর স্নায়ু (৩য় করোটি স্নায়ু), স্পাইনাল অ্যাকসেসরি স্নায়ু (একাদশ করোটি স্নায়ু)।
107. মিশ্র স্নায়ু কাকে বলে?
উত্তরঃ সেনসরি ও মোটর উভয় প্রকার নিউরোনের সমন্বয়ে গঠিত স্নায়ুগুলিকে মিশ্র স্নায়ু বা Mixed nerve বলে। এরা উভয় মুখেই স্নায়ু স্পন্দন পরিবহন করতে পারে। যেমন – ভেগাস স্নায়ু (দশম করোটিক স্নায়ু), গ্লসোফ্যারিঞ্জিয়াল স্নায়ু (নবম করোটিক স্নায়ু)।
108. নিউরোহিউমার কাকে বলে?
উত্তরঃ স্নায়ুস্পন্দন অ্যাক্সনের শেষপ্রান্তে পৌঁছোবার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাক্সনের সাইন্যাপস সংলগ্ন প্রান্ত থেকে একপ্রকার রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়ে থেকে, যা পরবর্তী স্নায়ুকোশ বা নিউরোনকে উত্তেজিত করে থেকে – এই রাসায়নিক পদার্হতকেই নিউরোহিউমোর বলে। ইহা নিউরোসিক্রেশান নামেও পরিচিত।
109. প্রান্তসন্নিকর্ষ বা সাইন্যাপস কাকে বলে?
উত্তরঃ দুটি নিউরোনের যে সংযোগস্থলে একটি নিউরোনের শেষ এবং অপর নিউরোনের শুরু, তাকে প্রান্তসন্নিকর্ষ বা স্নায়ুসন্নিধি বা সাইন্যাপস্ বলে।
110. প্রতিবর্ত ক্রিয়া কাকে বলে?
উত্তরঃ প্রাণীদেহে নির্দিষ্ট উদ্দীপনার প্রভাবে (সংগাবহ উদ্দীপনা) যে স্বতঃস্ফূর্ত তাতক্ষণিক ও অনৈচ্ছিক সাড়া (response) সৃষ্টি হয়, তাকে প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে।
উদাহরণ – চোখে তীব্র আলো পড়লে তারারন্ধ্র সংকুচিত হয়, লোভনীয় খাদ্যের দর্শনে বা ঘ্রাণে লালা ক্ষরণ হয়।
111. সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়া কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল প্রতিবর্ত ক্রিয়া কেবলমাত্র স্পাইন্যাল কর্ড বা সুষুম্নাকাণ্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে, তাদের সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে।
112. জটিল প্রতিবর্ত ক্রিয়া কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সকল প্রতিবর্ত ক্রিয়ায় ব্রেন বা মস্তিষ্কের সাহায্য প্রয়োজন হয়ে থাকে তাদের জটিল প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে।
113. প্রতিবর্ত চাপ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে পথে প্রতিবর্ত ক্রিয়ার স্নায়ুস্পন্দন আবর্তিত হয়, তাকে প্রতিবর্ত পথ বা রিফ্লেক্স আর্ক বলে।
114. গ্যাংলিয়া বা স্নায়ুগ্রন্থি কাকে বলে?
উত্তরঃ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের বাইরে কয়েকটি স্নায়ুকোশের কোশদেহগুলি যোগকলার আবরণী পরিবেষ্টিত হয়ে যে ঈষৎ স্ফীত গ্রন্থি সৃষ্টি করে, তাকে স্নায়ুগ্রন্থি বা নার্ভ গ্যাংলিয়ন বলে।
115. ব্রেন বা মস্তিষ্ক কাকে বলে?
উত্তরঃ স্পাইনাল কর্ড বা সুষুম্নাকাণ্ডের শীর্ষদেশে অবস্থিত কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের স্ফীতকায় যে অংশ ক্রেনিয়াম বা করোটির মধ্যে সুরক্ষিত থেকে প্রাণীর বুদ্ধি, চিন্তা, স্মৃতি ইত্যাদি স্নায়বিক আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে ব্রেন বা মস্তিষ্ক বলে।
116. নার্ভ-ইম্পালস বা স্নায়ুসংবেদ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বিশেষ তরঙ্গ সূক্ষ্ম রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে আয়নের পরিবর্তন ঘটিয়ে এক স্নায়ুকোশ থেকে অপর স্নায়ুকোশে প্রবাহিত হয় তাকে নার্ভ-ইম্পালস বা স্নায়ুসংবেদ বা স্নায়ুস্পন্দন বলে।
117. ইফেক্টর বা কারক কাকে বলে?
উত্তরঃ দেহের যে সকল অঙ্গ বা কোশ উদ্দীপক স্টিমিউলাসের প্রভাবে উদ্দীপিত হয় বা সাড়া দেয় তাদের Effector বা কারক বলে। যেমন – পেশি, গ্রন্থি ইত্যাদি।
118. কণ্ডাক্টর বা বাহক কাকে বলে?
উত্তরঃ স্নায়ুতন্ত্রের যে উপাদান স্নায়ুসংবেদন সমস্ত জীবদেহে পরিবহন বা সঞ্চারিত করে তাকে কণ্ডাক্টর বা বাহক বা সঞ্চারক বলে।
119. স্নায়ুতন্ত্রকে ভৌতসমন্বায়ক কাকে বলে?
উত্তরঃ স্নায়ুতন্ত্র বিভিন্ন স্নায়ুর মাধ্যমে প্রাণীদেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের মধ্যে ভৌতসমন্বয় গড়ে তোলে, তাই স্নায়ুতন্ত্রকে ভৌতসমন্বায়ক বলে।
120. র্যানভিয়ারের পর্ব বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ স্নায়ুকোশ বা নার্ভসেলের অ্যাক্সনের বিচ্ছিন্ন মায়েলিন সিদ্ অঞ্চলের নিউরোলেম্মা সংকুচিত হয়ে যে পর্ব গঠন করে তাকে র্যানভিয়ারের পর্ব বলে।
121. অ্যাক্সন হিলক কাকে বলে?
উত্তরঃ নিউরোনের অ্যাক্সন কোশদেহের যে অংশে সংলগ্ন থাকে, সেই অংশটিকেই অ্যাক্সন হিলক বলে।
122. নার্ভতন্ত্রের একক কী? এর প্রধান তিনটি অংশের নাম লেখ?
উত্তরঃ নিউরোন বা স্নায়ুকোশ হল স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যগত একক। এর প্রধান তিনটি অংশ হল – (১) ডেনড্রন, (২) সেলবডি বা কোশদেহ এবং (৩) অ্যাক্সন।
123. মেনিনজেস কাকে বলে?
উত্তরঃ মস্তিষ্কসহ সুষুম্নাকাণ্ড ডুরাম্যাটার, অ্যারাকনয়েডম্যাটার ও পায়াম্যাটার – এই ত্রিস্তরীয় যে আবরণে আবৃত থাকে তাকে মেনিনজেস বলে।
124. মস্তিষ্ক মেরুরস কী?
উত্তরঃ সুষুম্নাকাণ্ডের (Spinal cord) গহ্বরে এবং সাব-অ্যারাকনয়েড স্পেসে যে পরিবর্তিত কলারস থাকে তাকে মস্তিষ্ক মেরুরস বা সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড বলে।
এর প্রধান দুটি কাজ হল স্নায়ুকোশে অক্সিজেন সরবরাহ করা ও পুষ্টি যোগানো এবং বিপাকজাত দূষিত পদার্থগুলিকে কোশ থেকে রক্তস্রোতে প্রেরণ করা।
125. ভেণ্ট্রিকল বা মস্তিষ্ক নিলয় কাকে বলে?
উত্তরঃ মস্তিষ্কের মধ্যে যে প্রকোষ্ঠগুলি সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড দ্বারা পূর্ণ থাকে সেই প্রকোষ্ঠগুলিকে কোশ ভেন্ট্রিকল বা মস্তিষ্ক-নিলয় বলে।
126. সেরিব্রাম বা গুরুমস্তিষ্ক কাকে বলে?
উত্তরঃ অগ্রমস্তিষ্কের (Fore-brain) দুটি গোলার্ধে বিভক্ত মস্তিষ্কের সর্বাপেক্ষা যে বৃহদাকার অংশ প্রাণীদের স্মৃতি, চিন্তা, শিক্ষা, বুদ্ধি এবং তাপ, চাপ, স্পর্শ, যন্ত্রণা, কম্পন প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে তাকে সেরিব্রাম বা গুরুমস্তিষ্ক বলে।
127. সেরিবেলাম বা লঘুমস্তিষ্ক কাকে বলে?
উত্তরঃ পশ্চাদ্মস্তিষ্কের (Hind-brain) যে গোলার্ধদ্বয় একত্রে প্রাণীদেহের দৈহিক ভারসাম্য ও দেহভঙ্গিমা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, তাকে সেরিবেলাম বা লঘুমস্তিষ্ক বলে।
128. ভারমিস কাকে বলে?
উত্তরঃ সেবেলাম বা লঘুমস্তিষ্কের অর্ধগোলকদ্বয় যে স্নায়ুযোজক দিয়ে যুক্ত থাকে, তাকে ভারমিস বলে।
129. ফাইলাম টারমিনেল কাকে বলে?
উত্তরঃ স্পাইনাল কর্ড বা সুষুম্নাকাণ্ডের সরু চুলের মত শেষ প্রান্তকেই ফাইলাম টারমিনেল বলে।
130. স্নায়ুকোশ বিভাজিত হয় না কেন?
উত্তরঃ স্নায়ুকোশের সেন্ট্রিজোম নিষ্ক্রিয় থাকায় স্নায়ুকোশ বিভাজিত হয় না।
131. জ্ঞানেন্দ্রিয় কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ প্রাণীদেহের যে সকল গ্রাহক অঙ্গ পরিবেশ থেকে বিশেষ বিশেষ উদ্দীপনা গ্রহণ করে সুনির্দিষ্ট স্নায়ুর মাধ্যমে স্নায়বিক কেন্দ্রে প্রেরণ করে, তাকে জ্ঞানেন্দ্রিয় বলে। যেমন – চোখ, কান, নাক, জিভ ও ত্বক।
132. বিশেষ ইন্দ্রিয় বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ সাধারণ জ্ঞানেন্দ্রিয় অর্থাৎ চোখ, কান, নাক, জিভ, ত্বক ছাড়া প্রাণীদের অপর কোন অঙ্গ যখন ইন্দ্রিয়রূপে কাজ করে তখন তাকে বিশেষ ইন্দ্রিয় বলে। যেমন – মাছের স্পর্শেন্দ্রিয় বা ল্যাটারাল সেন্স লাইন।
133. রেটিনা (Retina) কাকে বলে? এবং কোথায় থাকে?
উত্তরঃ অক্ষিগোলকের একেবারে ভিতরের যে স্নায়ুসমৃদ্ধ আবরণীতে বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠিত হয় তাকে রেটিনা বা অক্ষিপট বলে। চোখের অক্ষিগোলকের তিনটি স্তরের ভিতরের স্তরটি রেটিনা।
134. কর্ণিয়া কাকে বলে?
উত্তরঃ অক্ষিগোলকের সর্বাপেক্ষা বাইরের স্তরের যে সম্মুখস্থ ১/৬ অংশ স্বচ্ছ এবং কোটরের বাইরে অবস্থিত তাকে কর্ণিয়া (cornea) বলে।
135. স্ক্লেরা বা শ্বেতমণ্ডল কাকে বলে?
উত্তরঃ অক্ষিগোলকের বহিরাবণীর যে ৫/৬ অংশ অক্ষিকোটরে অবস্থিত তাকে স্ক্লেরা বা শ্বেতমণ্ডল বলে।
136. আইরিশ (Iris) এর অবস্থান কোথায় এর কাজ কী?
উত্তরঃ অক্ষিগোলকের সম্মুখভাগে লেন্স-এর উপরে আইরিশ অবস্থিত। পিউপিল অর্থাৎ তারারন্ধ্রকে ছোট-বড় হতে সাহায্য করে আইরিশ।
137. লেন্স (Lens) বা অক্ষিকাচ কাকে বলে?
উত্তরঃ আইরিশ বা কনীনিকার ঠিক পিছনে সিলিয়ারী বডির সঙ্গে সাসপেনসারী লিগামেন্টযুক্ত একটি স্বচ্ছ-স্থিতিস্থাপক দ্বি-উত্তল (Biconvex) বৃত্তাকার চাকতি বিশেষকে লেন্স বা অক্ষিকাচ বলে। এর প্রধান কাজ হল আলোর প্রতিসরণ ঘটানো এবং আলোকরশ্মিরকে রেটিনার উপর কেন্দ্রীভূত করা।
138. ব্লাইণ্ড স্পট বা অন্ধ বিন্দু কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বিন্দুতে রেটিনা ও অপটিক নার্ভ মিলিত হয় এবং যেখানে বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না, তাকে ব্লাইণ্ড স্পট বা অন্ধবিন্দু বলে।
139. ইয়োলো স্পট বা পীতবিন্দু কাকে বলে?
উত্তরঃ পিউপিল বা তারারন্ধ্রের বিপরীত দিকে রেটিনার যে বিন্দুতে আলোক সুবেদী কোশ বেশি থাকায় আলোকরশ্মি কেন্দ্রীভূত হয়ে বস্তুর প্রতিবিম্ব ভালোভাবে গঠিত হয় তাকে ইয়োলো স্পট বা পীত বিন্দু বা ফোবিয়া সেন্ট্রালিস বলে।
140. অটোলিথ কী?
উত্তরঃ অটোলিথ অন্তঃকর্ণে অবস্থিত একপ্রকার চুন-নির্মিত কণিকা বিশেষ, যা দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
INFO : Madhyamik Life Science Suggestion – WBBSE with PDF Download for FREE | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান সাজেশন বিনামূল্যে ডাউনলোড | অধ্যায়ঃ জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় (অতিসংক্ষিপ্ত ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর)
File Details:
PDF Name : জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় – মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান সাজেশন
Language : Bengali
Size : 296.0 kb
No. of Pages : 25
Download Link : Click Here To Download
বিভিন্ন স্কুল বোর্ড পরীক্ষা, প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা, প্রতিদিন নতুন নতুন চাকরির খবর (Job News in Bengali) জানতে এবং সমস্ত পরীক্ষার এডমিট কার্ড ডাউনলোড (All Exam Admit Card Download) করতে winexam.in ওয়েবসাইট ফলো করুন, ধন্যবাদ।